Sale

Original price was: ₹730.00.Current price is: ₹584.00.

Raja Rammohan Roy: Bahumukhi vabonai

, , 978-1-68576-495-1 PAPERBACK FIRST EDITION , ,

রাজা রামমোহন রায় (জন্ম ২২শে মে, ১৭৭২ খ্রিঃ) ভারতের মুক্তিদূতের অগ্রদূত। নবজাগরণের হোতা। রক্ষণশীল ভারতবাসীর যুক্তিবাদের আলোকবর্তিকা। নারী স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রধান পুরোহিত। ভারতীয় নারীদের মুক্তির স্বাদ প্রদানকারী মহামানব, চিরমানব; নারীদের জীবন দেবতা রামমোহন রায় সত্যিকারের ‘রাজা’। রাজার থেকেও বেশি, তিনি হলেন ঈশ্বর। শুধু লোকেমুখে শোনা যায় বলে নয়, বিভিন্ন পণ্ডিত, গবেষক, শাস্ত্রাকার বলেন, রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ থেকে সতীদাহ নামক কু-প্রথার হাত থেকে নারীদের অকাল মৃত্যু রোধ করতে রাজা রামমোহন রায় যে ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন তাতে তাকে দেবতা রূপে পুজা করা উচিত। এই মহামানবের আসলেই নারীদের দ্বারা পুস্প-পত্র, ফল-মূলে পুজিত হওয়া উচিত। তার কর্মজীবনে তিনি সতীদাহ নামক নিষ্ঠুর প্রথা বন্ধ করতে যে সফলতা পেয়েছেন এর কৃতিত্ব সম্পূর্ণই তার। এটুকু বলেই শেষ করা যাবে না। সম্পূর্ণ প্রতিকুল পরিবেশে যে যুক্তির জাল বুনে তিনি মানুষকে ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে বের করে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের আলোকে টেনে এনেছেন- এ কৃতিত্বের অধিকার নিয়ে তাকে স্মরণ করার জন্য কাউকেই এক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। হিন্দু ধর্মের বহুত্ববাদ যেমন একদিকে মানুষকে পছন্দ করার ও স্বাধীনভাবে প্রকশের সুযোগ দেয় তেমনি অন্যদিকে যথার্থ সংহতি স্থাপনে বাঁধার সৃষ্টি করে। এই ধর্মের মধ্যে “নানা মুনির নানা মত” যা প্রকারন্তরে কোন একটি বিষয়ের যথার্থ ব্যাখ্যা প্রদানে বেশিরভাগ সময়েই অসমর্থ। এই বহুত্ববাদ পরিত্যাগ করে রামমোহন বেদান্তের অদ্বৈতবাদী চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে ‘একেশ্বরবাদ’ প্রতিষ্ঠিত করলেন। ধর্মের এই ব্যাখ্যা তার চিন্তা-চেতনার একটি নতুন দিক উন্মোচন করল। তার নবপ্রবর্তিত ধর্মমত গড়ে উঠল বিশ্বের সমস্ত ধর্মের চিরন্তন সত্য ও যুক্তিসিদ্ধ বাণীগুলিকে কেন্দ্র করে। তার কাছে বেদ, বাইবেল, কোরআন, ত্রিপিটকের মূল্য সমান। কোন ধর্মই তার কাছে মিথ্যা নয়, বরং ধর্মকে সত্য হিসেবে গ্রহণ করে সকল ধর্মের মূল সত্যগুলিকে নিয়ে ধর্মীয় সংহতি ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটাতে চেয়েছেন তার নব প্রবর্তিত ‘ব্রাহ্মধর্মে’। একদিকে সামাজিক সংস্কার অন্যদিকে ধর্মীয় সংস্কারেই নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখেন নি রামমোহন। সাধারণ মানুষ যাতে ভ্রান্ত পথে চালিত না হয়, শাস্ত্রের অপব্যাখ্যা যাতে তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে না পারে, সেজন্য মানুষের মনে জ্ঞানের আলো জ্বালাতে তিনি অনুবাদ করলেন বিভিন্ন গ্রন্থ, লিখলেন সেই সব গ্রন্থের ভাষ্য। তার অগাধ পাণ্ডিত্যের কাছে হেরে গিয়েছেন তৎকালীন সমাজের শাস্ত্রীয় আলোচনার তাবড় তাবড় অপব্যাখ্যাকারী। তিনি এখানেই দমে যান নি। নিজের যুক্তি সমাজের কাছে তুলে ধরার জন্য কলম ধরলেন। তিনি সাংবাদিকতা করলেন; সম্পাদনা করলেন, খবর সংগ্রহ করলেন। আর, তা করতে গিয়ে বাস্তব সমাজের মুখোমুখি হয়েছেন বারবার। সামাজিক বাস্তবতার পটভূমিতে দাঁড়িয়ে তিনি হতাশাগ্রস্ত হলেও ভেঙ্গে পড়েন নি। রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্মীয় নীতি, সামাজিক রীতি-নীতি, শিক্ষা সমস্ত দিক থেকে মৃতবৎ মানবজাতিকে উদ্ধার করতে নেমে পরলেন সম্মুখ সমরে। ভারতীয় আধ্যাত্মবাদ ও পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক-যুক্তিবাদের মিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে উদ্যোগী হলেন। একদিকে সংস্কৃত শিক্ষা অন্যদিকে ইংরেজি শিক্ষা- উভয়কেই তিনি সমান্তরালভাবে শিক্ষাব্যবস্থার অঙ্গীভূত করার চেষ্টা করেছেন। আর এই সমস্ত বিষয়ে তিনি সাহায্য পেয়েছেন তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকের। আবার ব্রিটিশ শাসনের কুফল সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন। কিন্তু ভারতবাসীর দৈন্যতা, অশিক্ষা, স্বাধীনতা সম্পর্কে অচেতনতা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে তার কাছে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি চাইলেও একাকী সেই লড়াই চালিয়ে যেতে পারতেন না। বরং বিভিন্ন প্রকার সংস্কার সাধনের মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশ শাসনের অপশাসনের থেকে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। ভারতবাসীর দরিদ্রতা, দৈন্যতা মুছে দেওয়ার জন্য, অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বি হওয়ার জন্য তিনি ব্যবসা বাণিজ্যের প্রতিও ধ্যান দিতে বলেছিলেন। রামমোহনের নারী মুক্তি আন্দোলন প্রকারন্তরে পরাধিনতার জ্বালা-যন্ত্রণা থেকে ভারতবাসীর মুক্তির আন্দোলন। রামমোহনের এই বিভিন্ন প্রকারের কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশবাসিকে উদ্ধার করার জন্য যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন তার জন্য কবিগুরু তাঁকে ‘ভারত পথিক’, ‘ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ’, ‘নবজাগরণের অগ্রদূত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। মোঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ তাকে ইংল্যান্ডে পাঠান সেখানে তাঁকে ‘রাজা’ উপাধি প্রদান করা হয়। ইংল্যান্ডেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৮৩৩ খ্রিঃ)। তাকে স্মরণ করে ব্রিটিশ সরকার ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে একটি রাস্তার নামকরণ করে ‘রাজা রামমোহন রায় স্ট্রিট।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “Raja Rammohan Roy: Bahumukhi vabonai”

Your email address will not be published. Required fields are marked *