Obhipraye

৯০’এর দশক পূর্বের প্রেক্ষাপটে লেখা এই গল্পটি মূলত উত্তর কলকাতার একটি পরিবারকে নিয়ে লেখা । পরিবারে এখন আছেন ভবতোষ বাবুর দুই কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানরা। গল্পটি পৈতৃক বাড়ি বিক্রি থেকে প্রাপ্ত বিক্রয় আয়ের একটি অংশ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়ে শুরু হয় । যদিও গল্পটি ওই পরিবারকে নিয়েই তবে বিভিন্ন পর্বের মধ্য দিয়ে গল্পের গতিপথ এবং অন্যান্য অনুক্রম সুকুমারবাবুর চরিত্রটিকে আরও মহিমান্বিত করে ফুটিয়ে তোলে ।  সুকুমারবাবু ভবতোষ বাবুর বাল্যকালের পাড়ারই বন্ধু। বয়সের যদিও দুজনের মধ্যে অনেক তফাৎ কিন্তু ঘনিষ্ঠতা এবং অন্তরঙ্গতা নাকি ছেলেবেলা থেকেই ছিল দেখার মত। ভবতোষ বাবু এখন মারা গেছেন কিন্তু পরোক্ষভাবে আর অজান্তেও সুকুমার বাবু যেন ওনার সন্তানদের অভিভাবকের মতন নিজের অবদান দিয়ে চলেছেন । এই চার ভাইবোনেদের বিয়ে হয়ে গেছে, তাদের সন্তানরাও বড় হয়ে গেছে কিন্তু তবুও যেন সুকুমার বাবুর প্রতি ওদের নির্ভরশীলতা এখনো বজায় আছে। সামনা-সামনি না হলেও আড়ালে ও নেপথ্যে সুকুমারবাবু তাদের সুবিধে অসুবিধা গুলির উপর একজন অভিভাবকের মতন নজর রেখে চলেছেন। আর যেখানে পারছেন তার সুরাহা খুঁজে দেবার প্রয়াসও করেছেন। আসলে সুকুমারবাবুর প্রবৃত্তিটাই এমন। মানুষের কাজে লাগা, কার কি উপকার করা যায়, সঠিক উপদেশ দেওয়া ইত্যাদি। ওনার দুই বন্ধু, বড়বাজারের ঘনশ্যাম  দাস ভালোটিয়া আর বউবাজার অঞ্চলের বনমালী বসাক। এদের দুজনেরও একই মত । যদিও এরা সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং সুকুমার বাবুর থেকে অনেক সচ্ছল এদের অবস্থা কিন্তু অনেক ব্যাপারে এরা সুকুমার বাবুর পরামর্শর উপরে নির্ভরশীল । তিনি তাঁর এলাকায় তাঁর নিজের সুনাম সম্পর্কে অবিদিত । তাঁর এই সততা, পরিচ্ছন্ন মনোভাব এবং অন্যদের ভাল করার অভিপ্রায় একটি এমন উদাহরণ উপস্থাপন করে যা বোঝায় যে মানুষের জীবন কেমন হওয়া উচিত ।